Latest News

Tuesday 31 May 2016

সূরা "আল ওয়াকি’আ"



পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে



১.) যখন সেই মহা ঘটনা সংঘটিত হবে


২.) তখন তার সংঘটিত হওয়াকে কেউ-ই মিথ্যা বলতে পারবে না।


৩.) তা হবে উলট-পালটকারী মহা প্রলয়।


৪.) পৃথিবীকে সে সময় অকস্মাত ভীষণভাবে আলোড়িত করা হবে


৫.) এবং পাহাড়কে এমন টুকরো টুকরো করে দেয়া হবে


৬.) যে, তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।


৭.) সে সময় তোমরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। ডান দিকের লোক।


৮.) ডান দিকের লোকদের (সৌভাগ্যের) কথা আর কতটা বলা যাবে।


৯.) বাম দিকের লোক বাম দিকের লোকদের (দুর্ভাগ্যের) পরিণতি আর কি বলা যাবে।


১০.) আর অগ্রগামীরা তো অগ্রগামীই।


১১.) তারাই তো নৈকট্য লাভকারী।


১২.) তারা নিয়ামতে ভরা জান্নাতে থাকবে।


১৩.) পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে বেশী


১৪.) এবং পরবর্তীদের মধ্য থেকে হবে কম।


১৫.) তারা মণিমুক্তা খচিত আসনসমূহে হেলান দিয়ে


১৬.) সামনা সামনি বসবে।


১৭.) তাদের মজলিসে চির কিশোররা।


১৮.) বহমান ঝর্ণার সুরায় ভরা পান পাত্র, হাতল বিশিষ্ট সুরা পাত্র এবং হাতলবিহীন বড় সুরা পাত্র নিয়ে সদা ব্যস্ত থাকবে


১৯.) যা পান করে মাথা ঘুরবে না। কিংবা বুদ্ধিবিবেক লোপ পাবে না।


২০.) তারা তাদের সামনে নানা রকমের সুস্বাদু ফল পরিবেশন করবে যাতে পছন্দ মত বেছে নিতে পারে।


২১.) পাখীর গোশত পরিবেশন করবে, যে পাখীর গোশত ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারবে।


২২.) তাদের জন্য থাকবে সুনয়না হুর


২৩.) এমন অনুপম সুন্দরী যেন লুকিয়ে রাখা মুক্তা।


২৪.) দুনিয়াতে তারা যেসব কাজ করেছে তার প্রতিদান হিসেবে এসব লাভ করবে।


২৫.) সেখানে তারা কোন অর্থহীন বা গোনাহর কথা শুনতে পাবে না।


২৬.) বরং যে কথাই শুনবে তা হবে যথাযথ ও ঠিকঠাক।


২৭.) আর ডান দিকের লোকেরা। ডান দিকের লোকদের সৌভাগ্যের কথা আর কতটা বলা যাবে।


২৮.) তারা কাঁটাবিহীন কুল গাছের কুল,


২৯.) থরে বিথরে সজ্জিত কলা,


৩০.) দীর্ঘ বিস্তৃত ছায়া,


৩১.) সদা বহমান পানি,


৩২.) অবাধ লভ্য অনিশেষ যোগ্য


৩৩.) প্রচুর ফলমূল


৩৪.) এবং সুউচ্চ আসনসমূহে অবস্থান করবে।


৩৫.) তাদের স্ত্রীদেরকে আমি বিশেষভাবে নতুন করে সৃষ্টি করবো


৩৬.) এবং কুমারী বানিয়ে দেব।


৩৭.) তারা হবে নিজের স্বামীর প্রতি আসক্ত ও তাদের সময়বস্কা।


৩৮.) এসব হবে ডান দিকের লোকদের জন্য।


৩৯.) তাদের সংখ্যা পূববর্তীদের মধ্য থেকেও হবে অনেক


৪০.) এবং পরবর্তীদের মধ্য থেকেও হবে অনেক।


৪১.) বাঁ দিকের লোক। বাঁ দিকের লোকদের দুর্ভাগ্যের কথা আর কি বলা যাবে।


৪২.) তারা লু হাওয়ার হলকা, ফুটন্ত পানি


৪৩.) এবং কালো ধোঁয়ার ছায়ার নীচে থাকবে।


৪৪.) তা না হবে ঠাণ্ডা, না হবে আরামদায়ক।


৪৫.) এরা সেসব লোক যারা এ পরিণতিলাভের পূর্বে সুখী ছিল


৪৬.) এবং বারবার বড় বড় গোনাহ করতো।


৪৭.) বলতোঃ আমরা যখন মরে মাটিতে মিশে যাবো এবং নিরেট হাড্ডি অবশিষ্ট থাকবো তখন কি আমাদেরকে জীবিত করে তোলা হবে?


৪৮.) আমাদের বাপ দাদাদেরকেও কি উঠানো হবে যারা ইতিপূর্বে অতিবাহিত হয়েছে?


৪৯.) হে নবী, এদের বলে দাও,


৫০.) নিশ্চিতভাবেই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের সব মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করা হবে। সেজন্য সময় নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে।


৫১.) তারপর হে পথভ্রষ্ট ও অস্বীকারকারীরা


৫২.) তোমাদেরকে ‘যাককূম’ বৃক্ষজাত খাদ্য খেতে হবে।


৫৩.) তোমরা ঐ খাদ্য দিয়েই পেট পূর্ণ করবে


৫৪.) এবং তার পরই পিপাসার্ত উটের মত


৫৫.) ফুটন্ত পানি পান করবে।


৫৬.) প্রতিদান দিবসে বাঁ দিকের লোকদের আপ্যায়নের উপকরণ।


৫৭.) আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি। এরপরও কেন তোমরা মানছো না?


৫৮.) তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যে শুক্র তোমরা নিক্ষেপ করো


৫৯.) তা দ্বারা সন্তান সৃষ্টি তোমরা করো, না তার স্রষ্টা আমি?


৬০.) আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যুকে বন্টন করেছি।


৬১.) তোমাদের আকার আকৃতি পাল্টে দিতে এবং তোমাদের অজানা কোন আকার-আকৃতিতে সৃষ্টি করতে আমি অক্ষম নই।


৬২.) নিজেদের প্রথমবার সৃষ্টি সম্পর্কে তোমরা জান। তবুও কেন শিক্ষা গ্রহণ করোনা।


৬৩.) তোমরা কি কখনো ভেবে দেখেছো, যে বীজ তোমরা বপন করে থাকো


৬৪.) তা থেকে ফসল উৎপন্ন তোমরা করো, না আমি?


৬৫.) আমি চাইলে এসব ফসলকে দানাবিহীন ভূষি বানিয়ে দিতে পারি। তখন তোমরা নানা রকমের কথা বলতে থাকবে।


৬৬.) বলবে আমাদেরকে তো উল্টা জরিমানা দিতে হলো।


৬৭.) আমাদের ভাগ্যটাই মন্দ।


৬৮.) তোমরা কি চোখ মেলে কখনো দেখেছো, যে পানি তোমরা পান করো,


৬৯.) মেঘ থেকে তা তোমরা বর্ষণ করো, না তার বর্ষণকারী আমি?


৭০.) আমি চাইলে তা লবণাক্ত বানিয়ে দিতে পারি। তা সত্ত্বেও তোমরা শোকরগোজার হও না কেন?


৭১.) তোমরা কি কখনো লক্ষ্য করেছো,-এই যে আগুন তোমরা জ্বালাও তার গাছ


৭২.) তোমরা সৃষ্টি করো, না তার সৃষ্টিকর্তা আমি?


৭৩.) আমি সেটিকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার উপকরণ এবং মুখাপেক্ষীদের জন্য জীবনোপকরণ বানিয়েছি।


৭৪.) অতএব হে নবী, তোমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করো।


৭৫.) অতএব না, আমি শপথ করছি তারকাসমূহের ভ্রমণ পথের।


৭৬.) এটা এক অতি বড় শপথ যদি তোমরা বুঝতে পার।


৭৭.) এ তো মহা সম্মানিত কুরআন।


৭৮.) একখানা সুরক্ষিত গ্রন্থে লিপিবদ্ধ।


৭৯.) পবিত্র সত্তাগণ ছাড়া আর কেউ তা স্পর্শ করতে পারে না।


৮০.) এটা বিশ্ব-জাহানের রবের নাযিলকৃত।


৮১.) এরপরও কি তোমরা এ বাণীর প্রতি উপেক্ষার ভাব প্রদর্শন করছো?


৮২.) এ নিয়ামতে তোমরা নিজেদের অংশ রেখেছো এই যে, তোমরা তা অস্বীকার করছো?


৮৩.) তোমরা যদি কারো অধীন না হয়ে থাকো


৮৪.) এবং নিজেদের এ ধারণার ব্যাপারে যদি সত্যবাদী হয়ে থাকো তাহলে মৃত্যু পথযাত্রীর প্রাণ যখন কণ্ঠনালীতে উপনীত হয়


৮৫.) এবং তোমরা নিজ চোখে দেখতে পাও যে, সে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে সে সময় তোমরা বিদায়ী প্রাণবায়ূকে ফিরিয়ে আন না কেন?


৮৬.) সে সময় তোমাদের চেয়ে আমিই তার অধিকতর নিকটে থাকি।


৮৭.) কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।


৮৮.) মৃত সেই ব্যক্তি যদি মুকাররাবীনদের কেউ হয়ে থাকে


৮৯.) তাহলে তার জন্য রয়েছে আরাম-আয়েশ, উত্তম রিযিক এবং নিয়ামতে ভরা জান্নাত।


৯০.) আর সে যদি ডান দিকের লোক হয়ে থাকে


৯১.) তাহলে তাকে সাদর অভিনন্দন জানানো হয় এভাবে যে, তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।


৯২.) আর সে যদি অস্বীকারকারী পথভ্রষ্টদের কেউ হয়ে থাকে


৯৩.) তাহলে তার সমাদরের জন্য রয়েছে ফূটন্ত গরম পানি


৯৪.) এবং জাহান্নামে ঠেলে দেয়ার ব্যবস্থা।


৯৫.) এ সবকিছুই অকাট্য সত্য।


৯৬.) অতএব, হে নবী, আপনার মহান রবের নামের তাসবীহ-- তথা পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

No comments:

Post a Comment

Recent Post